ভোম্বল আর রাজকন্যা...
ভোম্বলের ভাল নাম অয়ন, বাবা মার দেওয়া ডাক নাম দিপ। তবু তার থেকে পাঁচ বছরের ছোট সুন্দরী মিষ্টি বোন তারর দাদাকে ছোট থেকেই ডাকে ভোম্বল বলে। নামটা শুনলেই কিরকম অপমানজনক লাগে দিপের। বোনের দেখাদেখি বোনের সমবয়সী বান্ধবীরাও তাকে ভোম্বল বলেই ডাকে। দিপ তবু বাধা দেয়না ছোট বোনকে। বোন তার চেয়ে পাঁচ বছরের ছোট, বড় আদরের। ছোটবোন অপমান করলেও তার কেন জানি খারাপ লাগার বদলে ভাল লাগে। দিপের ছোট বোনের ভাল নাম অন্মেষা, ডাকনাম রিয়া। কিন্তু রিয়া যেরকম দাদাকে ক্ষেপিয়ে অপমান করে ভোম্বল বলে ডাকে, জবাবে দিপ ছোট বোনকে আদর করে বেশি সম্মান দেখিয়ে ডাকে রাজকন্যা বলে।
ভোম্বল আর রাজকন্যার সম্পর্ক ভালই চলছিল ছোটবেলায়। সমস্যা হল ভোম্বল মাধ্যমিকে অসাধারন ভাল রেজাল্ট করায়। ওর ছোটবোন রিয়া তখন সবে ক্লাস ৬ এ উঠেছে, একটু ফাঁকিবাজ পড়াশোনায়। ওদের বাবা মা রিয়াকে তারপর থেকে মাঝেমাঝেই শোনাতে লাগল "দাদাকে দেখে শেখ কিছু"।
দিপ বারন করলেও ওর বাবা মা শুনত না, রিয়াকে বারাবার ওর সাথে তুলনা করত। রিয়ার রাগটা এসে দাদার উপরে পরত। ফলে বাবা মায়ের জন্যেই যেন ওদের সম্পর্ক একটু খারাপ হয়ে গেল। রিয়া দাদাকে মাঝে মাঝে এড়িয়ে যেত। মাঝে মাঝে একা পেলে দাদাকে কথা শোনাতেও ছাড়ত না। দিপ অবশ্য কোন আপত্তি ছাড়াই সেসব শুনত। আর কেন যেন ওর মনে হত, ইশ, ঘটনাটা যদি এর উলটো হত তো দারুন হত। যদি রিয়া পড়ায় ভাল হত আর ও খারাপ হত আর বাবা মা ওকে রিয়ার সাথে তুলনা করে অপমাম করত তো দারুন হত! সত্যি, কেন যে নিজেকে ছোট বোনের থেকে ছোট ভাবতে, বোনের কাছে অল্প অপমানিত হতে দিপের এত ভাল লাগে ও নিজেই জানে না!
দিপের জীবনে অদ্ভুত একটা সুখবর নিয়ে এল জুন মাসের একটা দিন। তখন ওর বয়স ১৮ এ পরতে আর এক মাস বাকি, আর ওর ছোটবোন "রাজকন্যা" সবে ১৩ এ পরেছে। প্রথমে মাধ্যমিকের মত উচ্চমাধ্যমিকেও দারুন রেজাল্ট করল দিপ। দিপের বাবা মা খুশি হল খুব। কিন্তু দাদাকে নিয়ে বাড়াবাড়িতে রিয়া মনে মনে বেশ ক্রুদ্ধ হল, আর বাবা মা দাদা তিন জনকেই যেন এড়িয়ে চলতে লাগল। দিপের বাবা খুব খুশি হয়ে বলে দিল, " ভগবানের কাছে শুধু একটাই প্রার্থনা তুই যেন মেডিকেলে পাশ। জীবনে শুধু একটাই চাওয়া এখন আমার, আমার ছেলে মেয়েরা কেউ ডাক্তার হোক। রিয়াকে দিয়ে তো কিছুই হবে না, পারলে তুইই পারবি আমার স্বপ্ন পুরন করতে। যদি তুই সত্যি চান্স পাস, ভগবানের নামে শপথ করে বলছি, আমার সাধ্যে হলে তুই যা চাইবি তাই দেব আমি।"
ঘটনাটা সত্যিই হল আর এক সপ্তাহ পরেই। দিপ শুধু চান্সই পেল না, খুব ভাল rank করল। ওর বাবা মা ভয়ানক খুশি হল। কিন্তু এত খুশির মধ্যেও বোনের রাগ ভোম্বলকে খুশি করতে পারছিল না। এত আনন্দের মধ্যেও তার মনে হচ্ছিল বোন তার জন্যই খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরজন্য সেই দায়ী।
সারা সকাল বাবা মা তাকে নিয়ে অনেক লাফালাফি করল, একের পর এক ফোন করল আত্মীয়েরা। পাড়াপ্রতিবেশী এসে প্রশংসা করে গেল। শুধু দিপের বোন রিয়া তাকে সারা সকাল এড়িয়ে চলল। এমনকি তার রেজাল্ট উপলক্ষ্যে আনা লাঞ্চের স্পেশাল মেনুও সে স্পর্শও করল না। দিপের মনটা এত আনন্দের মধ্যেও খারাপ হয়ে গেল। মাঝে মাঝে তার উপরে বোন খুব রাগ করলে প্রথমে কথা বলে না, পরে অতিরিক্ত হুকুম করে রাগ পুষিয়ে নেয়। দিপ মনে মনে প্রার্থনা করতে লাগল আজও বোন যেন তাই করে ওর সাথে।
ওর প্রার্থনা সত্যি হল। দুপুরবেলা খাওয়ার পর ও এসে নিজের ঘরে সবে শুয়েছে। হঠাত ওর বোন 'রাজকন্যা' এসে ওকে একটা খোঁচা মেরে ঘুম ভাঙ্গাল।
" ওই ভোম্বল, অনেক ঘুমিয়েছিস, এবার ওঠ। স্টাডি রুমটার কি হাল করে রেখেছিস, তুই ঘর নোংরা করবি আর আমি গোছাব নাকি? যা, সব গুছিয়ে রাখ।
"সরি রাজকন্যা, আমার ভুল হয়ে গেছে", বলে পাঁচ বছরের ছোট বোনের কাছে ক্ষমা চেয়ে দিপ স্টাডি রুমে এল। এসে দেখে ঘর পুরোই লন্ডভন্ড। এটা সে করেনি, তাকে নিয়ে বাবা মার অতিরিক্ত মাতামাতি আর তার সাথে বোনের তুলনা করে বোনকে বাবা মায়ের কিছুটা ছোট করার রাগ থেকে বোনই করেছে যাতে তাকে দিয়ে কাজ করিয়ে এর শোধ তুলতে পারে।
ভোম্বল একবারও এর প্রতিবাদ করল না। সে মনে প্রানে এটাই চাইছিল, বোন তাকে কিছু হুকুম করে শোধ তুলুক। ছোট্ট বোন রাজকন্যাকে সে সত্যিই খুব ভালবাসে। বোন তাকে অকারনে হুকুম করলেও তার বড্ড ভাল লাগে!
"সরি বোন, আমার ভুল হয়ে গেছে", আমি এখুনি গুছিয়ে রাখছি। এই বলে সে বিনা প্রতিবাদে ঘরে ডাঁই করা বিভিন্ন আবর্জনা পরিস্কার করল প্রথমে। তারপরে মেঝেতে ছড়িয়ে রাখা বইয়ের স্তুপ যত্ন করে গুছিয়ে সেল্ফে রাখতে লাগল। দাদা বিনা প্রতিবাদে তার করা কুকর্মের দায় নিজের ঘাড়ে তুলে নিল দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠল রিয়ার।
প্রায় ১ ঘন্টা লাগল দিপের সব গুছিয়ে রাখতে। রিয়া পুরো সময়টা গদি মোড়া চেয়ারে বসে ৫ বছরের বড় দাদাকে হুকুম করতে লাগল কিভাবে গোছাতে হবে।
সব গুছিয়ে ১ ঘন্টার মধ্যে ঘর চকচকে করে ফেলল দিপ। তার মন খারাপ এরমধ্যেই অনেকটা কেটে গেছে ছোটবোনের হুকুমে কাজ করতে পেরে। সত্যি, ছোট বোন হুকুম করবে আর বড় দাদা চাকরের মত তার হুকুম পালন করবে ভাবতেই বড্ড ভাল লাগে তার।
ঘর গোছানো শেষ হতে রিয়া বলল, " হুম, বস এখন। দেখি গোছানো ঠিক হল কিনা।" দিপ লক্ষ্য করল পড়ার ঘরে একটাই চেয়ার, বাকিগুলো বোন অন্য কোথাও রেখেছে ইচ্ছা করে।
দিপ খুশি মনে ঠিক ছোট বোনের পায়ের কাছে হাটুগেড়ে বসে পরল। বোন একটু চারিদিকে নজর বুলিয়ে বলল, "হুম , ঠিকই গুছিয়েছিস। তবে মনে থাকে যেন, এরকমভাবে ঘর অগোছাল করে রাখলে পরেরবারে মার খাবি তুই।"
" সরি রাজকন্যা, আমার খুব বড় ভুল হয়ে গেছে। আমি তোবোকা ভোম্বল, তাই বারবার এরকম ভুল করে ফেলি। এরকম ভুল আবার করলে তুমি নিশ্চয়ই আমাকে মারতে পার। তুমি ইচ্ছা করলে আমাকে এখনও ইচ্ছা মত মারতে পার।"
রিয়ার মুখে হাসি ফুটে উঠল দিপের কথা শুনে। বাবা মা যতই দাদার সাথে তার তুলনা করে ওকে কথা শোনাক, রিয়া চিরদিনই জানে দাদা সেটা চায় না, তাকে চিরদিনই খুব ভালবাসে দাদা। সে দাদাকে ছোট করতে চাইলেই বরং দাদা খুশি হয়। কিন্তু সে দাদাকে মারার কথা বলতেও দাদা তাতে খুশি হয় প্রায় খুশি হয়ে মার খেতে চাইবে এতটা সে ভাবেওনি। তার সারাদিনের রাগ কেটে গেল দাদার এক কথায়।
পরীক্ষা করে দেখার জন্য সে দাদার দুই গালে পরপর দুটো থাপ্পর মারল, প্রথমে ডান হাত দিয়ে দাদার বাঁ গালে, তারপর বাঁ হাত দিয়ে দাদার ডানগালে।
" সত্যি তুই একটা বোকা ভোম্বল। রেগুলার রাজকন্যার হাতে মার না খেলে তোর উন্নতি হবে না।"
৫ বছরের বড় দাদা দুই গালে তার হাতে চড় খেয়ে যেটা করল সেটা রিয়াকে আরো অবাক করে দিল। রিয়ার লাল চটি পরা পায়ের কাছে হাটুগেড়ে বসে থাকা দিপ বোনের চটি পরা পায়ের উপরে নিজের মাথা ঠেকিয়ে প্রনাম করল ছোট বোনকে। তারপর বলল, " থ্যাংক ইউ রাজকন্যা। এখন থেকে তোমার ইচ্ছা হলেই যখন খুশি তুমি আমাকে এইভাবে মারবে। শুধু চড় কেন, ইচ্ছা হলেই তুমি আমাকে লাথিও মারতে পার। তুমি হলে এই বাড়ির রাজকন্যা, আর আমি বোকা ভোম্বল। আমাকে যখন খুশি মারার অধিকার আছে তোমার।"
তার প্রতি দাদার উথলে ওঠা ভক্তি দেখে সত্যি দারুন ভাল লাগছিল রিয়ার। সে চাইছিল এইভাবে বাবা মায়ের সামনেও দাদাকে মেরে, শাসন করে তার চেয়ে দাদাকে বেশি ভালবাসার শোধ তুলতে। রিয়া বাঁ পায়ের উপরে ডান পা তুলে বসল প্রথমে, তারপরে সত্যিই চটি পরা ডান পা দিয়ে দাদার বুকে আলতো করে একটা লাথি মেরে বলল, " ঠিক বলেছিস। তুই হলি একটা বোকা হাবা ভোম্বল আর আমি বাড়ির রাজকন্যা। তোর উচিত সবসময় রাজকন্যার সেবা করা। আমার স্থান তোর অনেক উপরে। কিন্তু এটা বাবা মা বুঝতেই চায় না। তোর দায়িত্ব বাবা মাকে এটা বুঝিয়ে বাবা মায়ের সামনেও আমার সেবা করা। কে রাজকন্যা আর কে বোকা ভোম্বল সেটা বাবা মা বুঝতেই চায় না।"
রিয়ার এটিচিউড দিপকে ভয়ানক আনন্দ দিচ্ছিল। তার ছোট্ট বোন চটি পরা পায়ে নিজে থেকে তার বুকে লাথি মারায় আনন্দে তার মন ভরে গিয়েছিল। সে দুই হাতে রিয়ার চটি পরা ডান পায়ের পাতাটা চেপে ধরে বলল, " নিশ্চয়ই রাজকন্যা। তুমি চিন্তা কর না। এই বাড়িতে তুমি রাজকন্যা আর আমি তোমার বোকা হাবা চাকর। এই সত্যিটা আমি বাবা মাকে আসতে আসতে বুঝিয়ে দেব। আর বাবা আমাকে কথা দিয়েছিল আমি মেডিক্যালে চান্স পেলে আমি যা চাইব তাই দেবে। আমি শুধু চাইব এই বাড়িতে তোমাকে রাজকন্যার স্থান দিতে আর আমাকে তোমার সেবা করে যেতে দিতে।"
" নে এখন আমার পা টিপে দে ভক্ত চাকরের মত। ভাল চাকরের মত পা টিপবি। টেপা খারাপ হলে মুখে লাথি খাবি কিন্তু।"
" নিশ্চয়ই রাজকন্যা। তোমার ইচ্ছা হলেই যখন খুশি আমার মুখে লাথি মারতে পার তুমি।"
এই বলে বোনের পায়ের কাছে বসে পরে বোনের চটি পরা পা দুটো নিজের কোলের উপরে তুলে নিল দিপ। তারপর আসতে আসতে ছোট বোনের পা দুটো পালা করে টিপতে লাগল দিপ। ছোট বোনের ডমিনেটিং আচরনে সে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সত্যিই, জীবনে এত আনন্দ কখনো পেতে পারে তা কল্পনাও করতে পারেনি সে।"
সে বোনের দুটো পাই পালা করে টিপে চলল। তার ছোট বোন গদি মোড়া চেয়ারে আরাম করে হেলান দিয়ে একটা গল্পের বই পড়ছে। আর সে চাকরের মত বোনের পায়ের কাছে বসে তার কোলের উপরে রাখা বোনের চটি পরা পা দুটো পালা করে টিপে চলেছে।
রিয়া শুধু মাঝে একবার বইয়ের উপর থেকে চোখ তুলে হুকুম করল দিপকে," এই ভোম্বল, যতক্ষন বাবা বা মা এসে তোকে আমার পা টিপতে না দেখছে ততক্ষন তুই আমার পা টিপে যাবি এইভাবে। বাবা মা দেখলেও তার সামনে আমার সেবা চালিয়ে যাবি। তারপর তারা কিছু বললে কিভাবে সামলাবি সেটা তোর ব্যাপার। সত্যিটা হল, তুই একটা বোকা ভোম্বল আর আমি এই বাড়ির রাজকন্যা। এটা এই এই বাড়িতে সবাইকে বুঝিয়ে দিতে হবে।"
" নিশ্চয়ই রাজকন্যা। আমি এখন থেকে সবার সামনেই এইভাবে তোমার সেবা করব।" এই বলে আবার ছোট বোনের চটি পরা পায়ের উপরে মাথা রেখে ভক্তিভরে প্রনাম করল দিপ।
প্রায় ১ ঘন্টা ধরে একটানা ছোটবোনের পা টেপা চালিয়ে গেল দিপ। বিকাল সাড়ে পাঁচটায় দিপ আর রিয়ার মা অনিমা দিপকে নিজের ঘরে না পেয়ে এই ঘরে খুঁজতে এল। দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকেই অনিমা থতমত খেয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে রইল দিপ আর রিয়ার দিকে। এটা কি দেখছে সে? সদ্য ক্লাস এইটে ওঠা পড়াশোনায় সাধারন রিয়ার পায়ের কাছে বসে চাকরের মত তার মেধাবী মেডিক্যালে চান্স পাওয়া দাদা পা টিপে দিচ্ছে তার!
ছেলে আর মেয়েকে এই অবস্থায় দেখে তাদের দিকে কিছুক্ষন ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইল অনিমা। সে কিছুতেই বুঝতে পারছিল না আজকের দিনে নিজের সাফল্য উওঅঅভোগ না করে এইভাবে ছোট বোনের পায়ের কাছে বসে হঠাত তার পা টিপছে কেন দিপ?
সে প্রায় ২ মিনিট চুপ করে তাকিয়ে রইল তার ছেলে মেয়ের দিকে। রিয়ার মুখে মুচকি হাসি বুঝিয়ে দিচ্ছিল সদ্য মেডিক্যালে চান্স পাওয়া দাদাকে দিয়ে এইভাবে নিজের পা টেপাতে পেরে খুব মজা পাচ্ছে সে। তার চটি পরা পা দুটো দাদার কোলের উপরে রাখা। ওর দাদা দিপ পালা করে টিপে চলেছে নিজের ছোট বোন রিয়ার পা দুটো।
রিয়া হঠাত নিজের চটি পরা ডান পা দিয়ে দাদার বুকে একটা ঠ্যালা মারল। " ঠিক হচ্ছে না রে ভোম্বল। পায়ের পাতাটা আরো ভাল করে টেপ।" কথাটা শেষ করে রিয়া নিজের বাঁ পায়ের উপরে ডান পা তুলে আড়চোখে মায়ের দিকে তাকালো। অনিমার মনে হল মেয়ে বোধহয় এটা ইচ্ছা করে করল তাকে দেখানোর জন্য। কিন্তু তার জবাবে ছেলের রিয়্যাকশনটা তাকে সত্যি অবাক করে দিল। বুকে ছোট বোনের চটি পরা পায়ের খোঁচা খেয়ে ছোট বোনের চটি পরা ডান পায়ের উপরে নিজের মাথাটা নামিয়ে দিল দিপ। বোনের পায়ের উপরে নিজের মাথাটা রেখে বলল, " সরি রাজকন্যা। আমি তো বোকা ভোম্বল। সব নিজে থেকে ধরতে পারি না। আমি ভুল করলে এইভাবে ধরিয়ে দিয় তুমি।" এই বলে ঠিক যেন রিয়ার চাকরের মত ওর পা টিপতে লাগল ওর ৫ বছরের বড় দাদা দিপ।
" কি ব্যাপার রে রিয়া? হঠাত তুই বড় দাদাকে দিয়ে পা টেপাচ্ছিস কেন?" অনিমা অবশেষে জিজ্ঞাসা করল রিয়াকে।
" বা রে, আমার কি দোষ? আমি তো দাদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম এত্ত ভাল রেজাল্ট করার জন্য তুই কি গিফট চাস? তাতে দাদা বলল, গিফট তো বাবা মা দেবে, তোকে কিছু দিতে হবে না। শুধু চল ছোটবেলার মত আমরা রাজকন্যা আর বোকা চাকর ভোম্বল খেলাটা খেলি। তাই আমি ওর কথায় খেলা শুরু করলাম। প্রথমে ওকে অর্ডার করে ঘরটা পরিস্কার করালাম। তারপর অর্ডার দিলাম, আমার পা টিপে দেওয়ার জন্য। বিশ্বাস না হলে তুমি দাদাকেই জিজ্ঞাসা কর।"
এই বলে চটি পরা ডান পা দিয়ে আবার দাদার বুকে ঠ্যালা মারল রিয়া। " এই ভোম্বল, মা কে বল, আমার কথা ঠিক কিনা।"
" হ্যাঁ মা, রাজকন্যা ঠিকই বলছে। আমিই ওকে রিকোয়েস্ট করেছি ছোটবেলার মত এই গেমটা আজ খেলার জন্য।"
অনিমা ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকাল। তখন নাহয় ছোট ছিলি। কিন্তু এখন এটা কেমন খেলা তোদের? তোর বোন তোকে খেলার ছলে অর্ডার করছে, তোর কোলের উপরে পা রেখে পা টেপাচ্ছে সেটা তোর ভাল লাগছে?"
দিপকে উত্তর দেওয়ার সুযোগ দিল না রিয়া। তার আগেই চটি পরা পা দুটো দাদার কোলের উপর থেকে তুলে দাদার কাঁধের উপরে রাখল সে। " দাদার কোলের উপরে পা রাখায় দাদার খারাপ লাগার কথা মা? সরি, তাহলে দাদার কাঁধের উপরে রাখছি পা দুটো।" রিয়ার হাসি বুঝিয়ে দিচ্ছিল মায়ের সামনে দাদাকে এইভাবে ব্যবহার করতে পারার আনন্দ সে দারুন উপভোগ করছিল। বাবা- মায়ের কথায় কথায় তার সাথে দাদার স্বভাব ও পড়াশোনার তুলনা করে তাকে ছোট করার দারুন এক প্রতিশোধ নিচ্ছিল সে।"
" মা, রিয়া আমার আদরের ছোট্ট বোন। ও আমাকে একটু হুকুম করে আনন্দ পেলে এতে কি সমস্যা। ওকে খুশি দেখলে আমারও খুব ভাল লাগে।" মন দিয়ে ছোট বোন রিয়ার কাঁধে রাখা পা দুটো টিপতে টিপতে বলল দিপ।
" থাক, তোরা তোদের ইচ্ছামত খেলিস। তবে এখন খাওয়ার ঘরে এসে চা আর টিফিন খেয়ে যা আগে।" গলায় একটা হালছাড়া বিরক্তিভাব ফুটিয়ে বলল অনিমা।
ভোম্বল আর রাজকন্যা ( পার্ট ২)
অনিমার চোখের সামনেই এবার দাদার কাঁধের উপর থেকে চটি পরা ডান পা টা তুলে দাদার মুখটা চটির তলা দিয়ে আলতো করে ঠেলে রিয়া বলল, " চল দাদা, টিফিন খেতে খেতে আমার সেবা করবি।" এই বলে রিয়া দাদার কাঁধের উপর থেকে পা নামিয়ে মেঝেতে উঠে দাঁড়াল।
অনিমা স্পষ্ট দেখতে পেল দিপের ঠোঁট দুটো রিয়ার চটির তলায় ঘসা খেল। দিপ এতেও খুশি হয়ে মেঝেতে দাঁড়ানো পাঁচ বছরের ছোট বোনের চটি পরা পায়ের উপরে নিজের মাথা ঠেকিয়ে শাষ্টাঙ্গে প্রনাম করে বলল, " চলো রাজকন্যা।"
দিপের বাবা রমেশ তখন খাওয়ার ঘরের সোফায় বসে টিভি দেখছিল। রিয়া আর দিপকে একসাথে ঘরে ঢুকতে দেখে সে দিপকে কাছে ডেকে পাশে বসাল। রিয়ার দিকে ভ্রুক্ষেপও করল না।তার কোন ধারনাও নেই অবশ্য যে সন্তানকে সে আদর করে কাছে ডাকছে সেই "বোকা ভোম্বল" এতক্ষন তার অবহেলার পাত্র অপর সন্তান "রাজকন্যা"র কিভাবে সেবা করছিল! রিয়া একটু দূরে চেয়ারে গিয়ে বসল। অনিমা চা আনতে রান্নাঘরে চলে গেল।
অনিমা সবাইকে চা দিয়ে নিজেও একটা চেয়ার নিয়ে রিয়ার থেকে একটু দূরে বসে চা খেতে লাগল। রমেশ খুশি মনে দিপের সঙ্গে কিছুক্ষন কথা বলল প্রথমে। তার মন খুবই খুশি আজ। তার চিরকালের ইচ্ছা তার ছেলে বা মেয়ে ডাক্তার হোক। দিপ অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরন করতে যাচ্ছে।
কিছুক্ষন পর রমেশ নিজে থেকেই জিজ্ঞাসা করল, " তোর তো আমার কাছে একটা দারুন গিফট পাওনা আছে। বল কি চাস?"
দিপ প্রথমে কি বলবে বুঝতে না পেরে লজ্জায় মুখ নিচু করল।
" লজ্জা পাস না, বল কি চাস।" রমেশ বলল।
" আমি কোন জিনিস চাই না, তবে অবশ্যই একটা জিনিস চাই। তবে আগে তোমাকে কথা দিতে হবে যা চাই তুমি দেবে। শোনার পর না করতে পারবে না।"
" আজ কি তোর কোন কথায় না করতে পারি আমি? বল কি চাস তুই।" রমেশ বলল।
" কথা দিচ্ছ কিন্তু বাবা, পরে না বলতে পারবে না।" দিপ নিশ্চিত হয়ে নিতে চাইল বলার আগে।
" নিশ্চয়ই। তুই নির্ভয়ে বল।" রমেশ বলল।
" আমি রিয়ার চেয়ে পড়াশোনায় একটু ভাল বলে তোমরা যেরকম কথায় কথায় আমার সাথে ওর তুলনা করে ওকে ছোট কর সেটা খুব খারাপ কর। এতদিনে অকারনে আমার ছোট্ট বোনটাকে তোমরা অনেক কষ্ট দিয়েছ। এর জন্য তুমি, মা দুজনেই অনেকটা দায়ী, তার চেয়েও বেশী দায়ী আমি। আমার জন্যই ওকে ছোট থেকে এত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এবার আমাদের সবারই প্রায়শ্চিত্তের পালা, বিশেষ করে আমার। তুমি কথা দাও এতদিন তোমরা যা করেছ ঠিক তার উল্টোটা করবে। রিয়ার ভাল দিক গুলো দেখার চেষ্টা করবে আর আমার খারাপ দিকগুলো খুঁজে বার করে রিয়ার তুলনায় আমাকে ছোট করবে। রিয়া এতদিন অনেক কষ্ট পেয়েছে আমাদের জন্য। এখন থেকে ও এই বাড়ির রাজকন্যার মত থাকবে। আর আমাকে ও যা খুশি হুকুম করবে, ইচ্ছা হলে মারতেও পারে। তোমরা রিয়াকে উতসাহ না দাও, অন্তত বাধা দেবে না এতে।"
দাদার কথা শুনে রিয়ার মুখে চওড়া হাসি ফুটে উঠল। অনিমা একবার রিয়ার দিকে তাকালো, তারপর অবাক চোখে দিপের দিকে চেয়ে রইল কিছুক্ষন। সত্যি, আজ যে কি হয়েছে ছেলেটার, আর কিই বা সে চাইছে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। পরীক্ষায় দুর্দান্ত রেজাল্ট করে কেউ গিফট হিসাবে ছোট বোনের হুকুমে চলা আর তার হাতে মার খাওয়ার অধিকার চাইতে পারে তার যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না।
রমেশের অবস্থাও অনিমার মতই হল দিপের কথা শুনে। সে ভেবে রেখেছিল দিপ হয়ত দামি একটা মোবাইল, ল্যাপটপ বা এরকম কিছু গিফট হিসাবে চাইতে পারে। অথচ দিপের কথা শুনে সে যেন আকাশ থেকে পরল। প্রথমে কি বলবে তাই ভেবে পেল না। পরে তার মনে হল, হয়ত সত্যিই সে দিপের প্রতিভার প্রশংসা করতে গিয়ে রিয়াকে কিছুটা বঞ্চনা করে ফেলেছে। সেটা তার বা অনিমার অতটা চোখে না পরলেও দিপের চোখে পরেছে।
রমেশ কিছুক্ষন ভেবে ছেলেকে বলল, " ঠিক আছে, তুই যা বলছিস তাই হবে। সত্যিই হয়ত আমরা রিয়াকে কিছুটা দুঃখ- কষ্ট দিয়ে ফেলেছি না বুঝে, তোকে ওর থেকে কিছু বেশি প্রিভিলেজও দিয়ে ফেলেছি আমরা। তাই, তুই যা বললি সেরকমই হবে এখন থেকে। তবে সত্যিই কি তুই চাস তোদের সমান ভাবে ট্রিট না করে রিয়াকেই এখন থেকে প্রিভিলেজড চাইল্ড হিসাবে ট্রিট করি আমরা?"
" হ্যাঁ বাবা, আমি তাই চাই। রিয়াও তাই চায়। দেখ, এতে আমরা দুজনেই ভাল থাকব। তোমরা যা চাও, রিয়াও ভাল স্টুডেন্ট হোক, এইভাবে কিছুদিন চলার পর দেখ সেটাও হয়ে যাবে। তোমাদেরও এই ব্যাবস্থা ভাল লাগবে তখন।"
" ঠিক আছে, তাই হবে। তোর এই কথা মেনে নিলাম আমি। কিন্তু তবু আমি চাই গিফট হিসাবে তুই আমার থেকে একটা ভাল কোন জিনিস নে এর পাশাপাশি।"
" ঠিক আছে বাবা। তুমি যখন বলছ তখন সেটাও নেব।" এই বলে রিয়ার দিকে তাকাল দিপ।
" কি চাওয়া যায় বল তো রাজকন্যা?"
" একটা আই-প্যাড নিয়ে নে ভোম্বল। তবে মনে রাখবি, সেটা শুধু আমি ধরব। কখনো আমি পারমিশন দিলে তুই ধরতে পারিস। আমার পারমিশান ছাড়া ধরলে শুধু থাপ্পরই না, লাথিও খাবি মনে রাখিস।"
বাবা মার সামনে ছোট বোনের এই ভার্বাল ডমিনেশন সত্যিই অসাধারন ভাল লাগল দিপের। সে বলল, " নিশ্চয়ই রাজকন্যা। তাই হবে। আর এখন থেকে তুমি শুধু তোমার আই প্যাড ধরলে কেন, এমনিই যখন খুশি যে কারনে খুশি আমাকে থাপ্পর আর লাথি মারতে পার। এখন থেকে তুমি এই বাড়ির রাজকন্যা আর আমি তোমার বোকা ভোম্বল চাকর।"
দিপ তারপর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, " তাহলে একটা নতুন আইপ্যাডই কিনে দিও আমাকে।"
" ওই বোকা ভোম্বল, এবার এদিকে আয়। রাজকন্যার পায়ের কাছে বসে একটু পা টিপে দে।"
" নিশ্চয়ই রাজকন্যা। এখুনি যাচ্ছি", বলে দিপ গিয়ে বোনের পায়ের কাছে বসে পরল আবার। ছোট বোনের চটি পরা পা দুটো বাবা মায়ের সামনেই নিজের কোলে তুলে নিল। তারপর চাকরের মত যত্ন করে টিপে দিতে থাকল তার ছোট্ট বোন 'রাজকন্যা'র পা দুটো।
নিজের দেওয়া কথা রাখতে রমেশ বলে ফেলল," ঠিক আছে, কালই তোকে নতুন আই প্যাড কিনে দেব।"
তারপর অবাক চোখে দিপের ছোট বোনেদ সেবা করা দেখতে লাগল। সে অলৌকিকতায় বিশ্বাস করলে ভাবত রিয়া তার দাদাকে মন্ত্র তন্ত্র পরে বশ করেছে। নাহলে কিভাবে এতটা সম্ভব? দিপ নিজের গিফট হিসাবে প্রায় ছোট বোনের চাকর হতে চাইল যখন তখনও সে ভাবেনি আরেকটা গিফট দিতে চাইলে সেই দামী গিফটটাও সে ছোট বোনের হাতে তুলে দিতে চাইবে। আর রিয়া তার জবাবে দাদাকে যখন খুশি থাপ্পর আর লাথি মারার অধিকার আদায় করে দাদাকে দিয়ে বাবা মায়ের সামনে পা টেপাতে শুরু করবে প্রায় চাকরের মত। সত্যি, দুই ভাই বোনের হল কি? অবাক হয়ে ভাবতে ভাবতে দিপের চাকরের মত রিয়ার পা টিপে দেওয়ার দৃশ্য দেখতে লাগল রমেশ।
অনিমাও এক দৃষ্টিতে দেখে চলল দুই ভাই বোনের কান্ড। তার দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে যে কি চলছে অনেক ভেবেও তার কুল কিনারা করতে পারল না অনিমা।
ভোম্বলের ভাল নাম অয়ন, বাবা মার দেওয়া ডাক নাম দিপ। তবু তার থেকে পাঁচ বছরের ছোট সুন্দরী মিষ্টি বোন তারর দাদাকে ছোট থেকেই ডাকে ভোম্বল বলে। নামটা শুনলেই কিরকম অপমানজনক লাগে দিপের। বোনের দেখাদেখি বোনের সমবয়সী বান্ধবীরাও তাকে ভোম্বল বলেই ডাকে। দিপ তবু বাধা দেয়না ছোট বোনকে। বোন তার চেয়ে পাঁচ বছরের ছোট, বড় আদরের। ছোটবোন অপমান করলেও তার কেন জানি খারাপ লাগার বদলে ভাল লাগে। দিপের ছোট বোনের ভাল নাম অন্মেষা, ডাকনাম রিয়া। কিন্তু রিয়া যেরকম দাদাকে ক্ষেপিয়ে অপমান করে ভোম্বল বলে ডাকে, জবাবে দিপ ছোট বোনকে আদর করে বেশি সম্মান দেখিয়ে ডাকে রাজকন্যা বলে।
ভোম্বল আর রাজকন্যার সম্পর্ক ভালই চলছিল ছোটবেলায়। সমস্যা হল ভোম্বল মাধ্যমিকে অসাধারন ভাল রেজাল্ট করায়। ওর ছোটবোন রিয়া তখন সবে ক্লাস ৬ এ উঠেছে, একটু ফাঁকিবাজ পড়াশোনায়। ওদের বাবা মা রিয়াকে তারপর থেকে মাঝেমাঝেই শোনাতে লাগল "দাদাকে দেখে শেখ কিছু"।
দিপ বারন করলেও ওর বাবা মা শুনত না, রিয়াকে বারাবার ওর সাথে তুলনা করত। রিয়ার রাগটা এসে দাদার উপরে পরত। ফলে বাবা মায়ের জন্যেই যেন ওদের সম্পর্ক একটু খারাপ হয়ে গেল। রিয়া দাদাকে মাঝে মাঝে এড়িয়ে যেত। মাঝে মাঝে একা পেলে দাদাকে কথা শোনাতেও ছাড়ত না। দিপ অবশ্য কোন আপত্তি ছাড়াই সেসব শুনত। আর কেন যেন ওর মনে হত, ইশ, ঘটনাটা যদি এর উলটো হত তো দারুন হত। যদি রিয়া পড়ায় ভাল হত আর ও খারাপ হত আর বাবা মা ওকে রিয়ার সাথে তুলনা করে অপমাম করত তো দারুন হত! সত্যি, কেন যে নিজেকে ছোট বোনের থেকে ছোট ভাবতে, বোনের কাছে অল্প অপমানিত হতে দিপের এত ভাল লাগে ও নিজেই জানে না!
দিপের জীবনে অদ্ভুত একটা সুখবর নিয়ে এল জুন মাসের একটা দিন। তখন ওর বয়স ১৮ এ পরতে আর এক মাস বাকি, আর ওর ছোটবোন "রাজকন্যা" সবে ১৩ এ পরেছে। প্রথমে মাধ্যমিকের মত উচ্চমাধ্যমিকেও দারুন রেজাল্ট করল দিপ। দিপের বাবা মা খুশি হল খুব। কিন্তু দাদাকে নিয়ে বাড়াবাড়িতে রিয়া মনে মনে বেশ ক্রুদ্ধ হল, আর বাবা মা দাদা তিন জনকেই যেন এড়িয়ে চলতে লাগল। দিপের বাবা খুব খুশি হয়ে বলে দিল, " ভগবানের কাছে শুধু একটাই প্রার্থনা তুই যেন মেডিকেলে পাশ। জীবনে শুধু একটাই চাওয়া এখন আমার, আমার ছেলে মেয়েরা কেউ ডাক্তার হোক। রিয়াকে দিয়ে তো কিছুই হবে না, পারলে তুইই পারবি আমার স্বপ্ন পুরন করতে। যদি তুই সত্যি চান্স পাস, ভগবানের নামে শপথ করে বলছি, আমার সাধ্যে হলে তুই যা চাইবি তাই দেব আমি।"
ঘটনাটা সত্যিই হল আর এক সপ্তাহ পরেই। দিপ শুধু চান্সই পেল না, খুব ভাল rank করল। ওর বাবা মা ভয়ানক খুশি হল। কিন্তু এত খুশির মধ্যেও বোনের রাগ ভোম্বলকে খুশি করতে পারছিল না। এত আনন্দের মধ্যেও তার মনে হচ্ছিল বোন তার জন্যই খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরজন্য সেই দায়ী।
সারা সকাল বাবা মা তাকে নিয়ে অনেক লাফালাফি করল, একের পর এক ফোন করল আত্মীয়েরা। পাড়াপ্রতিবেশী এসে প্রশংসা করে গেল। শুধু দিপের বোন রিয়া তাকে সারা সকাল এড়িয়ে চলল। এমনকি তার রেজাল্ট উপলক্ষ্যে আনা লাঞ্চের স্পেশাল মেনুও সে স্পর্শও করল না। দিপের মনটা এত আনন্দের মধ্যেও খারাপ হয়ে গেল। মাঝে মাঝে তার উপরে বোন খুব রাগ করলে প্রথমে কথা বলে না, পরে অতিরিক্ত হুকুম করে রাগ পুষিয়ে নেয়। দিপ মনে মনে প্রার্থনা করতে লাগল আজও বোন যেন তাই করে ওর সাথে।
ওর প্রার্থনা সত্যি হল। দুপুরবেলা খাওয়ার পর ও এসে নিজের ঘরে সবে শুয়েছে। হঠাত ওর বোন 'রাজকন্যা' এসে ওকে একটা খোঁচা মেরে ঘুম ভাঙ্গাল।
" ওই ভোম্বল, অনেক ঘুমিয়েছিস, এবার ওঠ। স্টাডি রুমটার কি হাল করে রেখেছিস, তুই ঘর নোংরা করবি আর আমি গোছাব নাকি? যা, সব গুছিয়ে রাখ।
"সরি রাজকন্যা, আমার ভুল হয়ে গেছে", বলে পাঁচ বছরের ছোট বোনের কাছে ক্ষমা চেয়ে দিপ স্টাডি রুমে এল। এসে দেখে ঘর পুরোই লন্ডভন্ড। এটা সে করেনি, তাকে নিয়ে বাবা মার অতিরিক্ত মাতামাতি আর তার সাথে বোনের তুলনা করে বোনকে বাবা মায়ের কিছুটা ছোট করার রাগ থেকে বোনই করেছে যাতে তাকে দিয়ে কাজ করিয়ে এর শোধ তুলতে পারে।
ভোম্বল একবারও এর প্রতিবাদ করল না। সে মনে প্রানে এটাই চাইছিল, বোন তাকে কিছু হুকুম করে শোধ তুলুক। ছোট্ট বোন রাজকন্যাকে সে সত্যিই খুব ভালবাসে। বোন তাকে অকারনে হুকুম করলেও তার বড্ড ভাল লাগে!
"সরি বোন, আমার ভুল হয়ে গেছে", আমি এখুনি গুছিয়ে রাখছি। এই বলে সে বিনা প্রতিবাদে ঘরে ডাঁই করা বিভিন্ন আবর্জনা পরিস্কার করল প্রথমে। তারপরে মেঝেতে ছড়িয়ে রাখা বইয়ের স্তুপ যত্ন করে গুছিয়ে সেল্ফে রাখতে লাগল। দাদা বিনা প্রতিবাদে তার করা কুকর্মের দায় নিজের ঘাড়ে তুলে নিল দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠল রিয়ার।
প্রায় ১ ঘন্টা লাগল দিপের সব গুছিয়ে রাখতে। রিয়া পুরো সময়টা গদি মোড়া চেয়ারে বসে ৫ বছরের বড় দাদাকে হুকুম করতে লাগল কিভাবে গোছাতে হবে।
সব গুছিয়ে ১ ঘন্টার মধ্যে ঘর চকচকে করে ফেলল দিপ। তার মন খারাপ এরমধ্যেই অনেকটা কেটে গেছে ছোটবোনের হুকুমে কাজ করতে পেরে। সত্যি, ছোট বোন হুকুম করবে আর বড় দাদা চাকরের মত তার হুকুম পালন করবে ভাবতেই বড্ড ভাল লাগে তার।
ঘর গোছানো শেষ হতে রিয়া বলল, " হুম, বস এখন। দেখি গোছানো ঠিক হল কিনা।" দিপ লক্ষ্য করল পড়ার ঘরে একটাই চেয়ার, বাকিগুলো বোন অন্য কোথাও রেখেছে ইচ্ছা করে।
দিপ খুশি মনে ঠিক ছোট বোনের পায়ের কাছে হাটুগেড়ে বসে পরল। বোন একটু চারিদিকে নজর বুলিয়ে বলল, "হুম , ঠিকই গুছিয়েছিস। তবে মনে থাকে যেন, এরকমভাবে ঘর অগোছাল করে রাখলে পরেরবারে মার খাবি তুই।"
" সরি রাজকন্যা, আমার খুব বড় ভুল হয়ে গেছে। আমি তোবোকা ভোম্বল, তাই বারবার এরকম ভুল করে ফেলি। এরকম ভুল আবার করলে তুমি নিশ্চয়ই আমাকে মারতে পার। তুমি ইচ্ছা করলে আমাকে এখনও ইচ্ছা মত মারতে পার।"
রিয়ার মুখে হাসি ফুটে উঠল দিপের কথা শুনে। বাবা মা যতই দাদার সাথে তার তুলনা করে ওকে কথা শোনাক, রিয়া চিরদিনই জানে দাদা সেটা চায় না, তাকে চিরদিনই খুব ভালবাসে দাদা। সে দাদাকে ছোট করতে চাইলেই বরং দাদা খুশি হয়। কিন্তু সে দাদাকে মারার কথা বলতেও দাদা তাতে খুশি হয় প্রায় খুশি হয়ে মার খেতে চাইবে এতটা সে ভাবেওনি। তার সারাদিনের রাগ কেটে গেল দাদার এক কথায়।
পরীক্ষা করে দেখার জন্য সে দাদার দুই গালে পরপর দুটো থাপ্পর মারল, প্রথমে ডান হাত দিয়ে দাদার বাঁ গালে, তারপর বাঁ হাত দিয়ে দাদার ডানগালে।
" সত্যি তুই একটা বোকা ভোম্বল। রেগুলার রাজকন্যার হাতে মার না খেলে তোর উন্নতি হবে না।"
৫ বছরের বড় দাদা দুই গালে তার হাতে চড় খেয়ে যেটা করল সেটা রিয়াকে আরো অবাক করে দিল। রিয়ার লাল চটি পরা পায়ের কাছে হাটুগেড়ে বসে থাকা দিপ বোনের চটি পরা পায়ের উপরে নিজের মাথা ঠেকিয়ে প্রনাম করল ছোট বোনকে। তারপর বলল, " থ্যাংক ইউ রাজকন্যা। এখন থেকে তোমার ইচ্ছা হলেই যখন খুশি তুমি আমাকে এইভাবে মারবে। শুধু চড় কেন, ইচ্ছা হলেই তুমি আমাকে লাথিও মারতে পার। তুমি হলে এই বাড়ির রাজকন্যা, আর আমি বোকা ভোম্বল। আমাকে যখন খুশি মারার অধিকার আছে তোমার।"
তার প্রতি দাদার উথলে ওঠা ভক্তি দেখে সত্যি দারুন ভাল লাগছিল রিয়ার। সে চাইছিল এইভাবে বাবা মায়ের সামনেও দাদাকে মেরে, শাসন করে তার চেয়ে দাদাকে বেশি ভালবাসার শোধ তুলতে। রিয়া বাঁ পায়ের উপরে ডান পা তুলে বসল প্রথমে, তারপরে সত্যিই চটি পরা ডান পা দিয়ে দাদার বুকে আলতো করে একটা লাথি মেরে বলল, " ঠিক বলেছিস। তুই হলি একটা বোকা হাবা ভোম্বল আর আমি বাড়ির রাজকন্যা। তোর উচিত সবসময় রাজকন্যার সেবা করা। আমার স্থান তোর অনেক উপরে। কিন্তু এটা বাবা মা বুঝতেই চায় না। তোর দায়িত্ব বাবা মাকে এটা বুঝিয়ে বাবা মায়ের সামনেও আমার সেবা করা। কে রাজকন্যা আর কে বোকা ভোম্বল সেটা বাবা মা বুঝতেই চায় না।"
রিয়ার এটিচিউড দিপকে ভয়ানক আনন্দ দিচ্ছিল। তার ছোট্ট বোন চটি পরা পায়ে নিজে থেকে তার বুকে লাথি মারায় আনন্দে তার মন ভরে গিয়েছিল। সে দুই হাতে রিয়ার চটি পরা ডান পায়ের পাতাটা চেপে ধরে বলল, " নিশ্চয়ই রাজকন্যা। তুমি চিন্তা কর না। এই বাড়িতে তুমি রাজকন্যা আর আমি তোমার বোকা হাবা চাকর। এই সত্যিটা আমি বাবা মাকে আসতে আসতে বুঝিয়ে দেব। আর বাবা আমাকে কথা দিয়েছিল আমি মেডিক্যালে চান্স পেলে আমি যা চাইব তাই দেবে। আমি শুধু চাইব এই বাড়িতে তোমাকে রাজকন্যার স্থান দিতে আর আমাকে তোমার সেবা করে যেতে দিতে।"
" নে এখন আমার পা টিপে দে ভক্ত চাকরের মত। ভাল চাকরের মত পা টিপবি। টেপা খারাপ হলে মুখে লাথি খাবি কিন্তু।"
" নিশ্চয়ই রাজকন্যা। তোমার ইচ্ছা হলেই যখন খুশি আমার মুখে লাথি মারতে পার তুমি।"
এই বলে বোনের পায়ের কাছে বসে পরে বোনের চটি পরা পা দুটো নিজের কোলের উপরে তুলে নিল দিপ। তারপর আসতে আসতে ছোট বোনের পা দুটো পালা করে টিপতে লাগল দিপ। ছোট বোনের ডমিনেটিং আচরনে সে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সত্যিই, জীবনে এত আনন্দ কখনো পেতে পারে তা কল্পনাও করতে পারেনি সে।"
সে বোনের দুটো পাই পালা করে টিপে চলল। তার ছোট বোন গদি মোড়া চেয়ারে আরাম করে হেলান দিয়ে একটা গল্পের বই পড়ছে। আর সে চাকরের মত বোনের পায়ের কাছে বসে তার কোলের উপরে রাখা বোনের চটি পরা পা দুটো পালা করে টিপে চলেছে।
রিয়া শুধু মাঝে একবার বইয়ের উপর থেকে চোখ তুলে হুকুম করল দিপকে," এই ভোম্বল, যতক্ষন বাবা বা মা এসে তোকে আমার পা টিপতে না দেখছে ততক্ষন তুই আমার পা টিপে যাবি এইভাবে। বাবা মা দেখলেও তার সামনে আমার সেবা চালিয়ে যাবি। তারপর তারা কিছু বললে কিভাবে সামলাবি সেটা তোর ব্যাপার। সত্যিটা হল, তুই একটা বোকা ভোম্বল আর আমি এই বাড়ির রাজকন্যা। এটা এই এই বাড়িতে সবাইকে বুঝিয়ে দিতে হবে।"
" নিশ্চয়ই রাজকন্যা। আমি এখন থেকে সবার সামনেই এইভাবে তোমার সেবা করব।" এই বলে আবার ছোট বোনের চটি পরা পায়ের উপরে মাথা রেখে ভক্তিভরে প্রনাম করল দিপ।
প্রায় ১ ঘন্টা ধরে একটানা ছোটবোনের পা টেপা চালিয়ে গেল দিপ। বিকাল সাড়ে পাঁচটায় দিপ আর রিয়ার মা অনিমা দিপকে নিজের ঘরে না পেয়ে এই ঘরে খুঁজতে এল। দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকেই অনিমা থতমত খেয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে রইল দিপ আর রিয়ার দিকে। এটা কি দেখছে সে? সদ্য ক্লাস এইটে ওঠা পড়াশোনায় সাধারন রিয়ার পায়ের কাছে বসে চাকরের মত তার মেধাবী মেডিক্যালে চান্স পাওয়া দাদা পা টিপে দিচ্ছে তার!
ছেলে আর মেয়েকে এই অবস্থায় দেখে তাদের দিকে কিছুক্ষন ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইল অনিমা। সে কিছুতেই বুঝতে পারছিল না আজকের দিনে নিজের সাফল্য উওঅঅভোগ না করে এইভাবে ছোট বোনের পায়ের কাছে বসে হঠাত তার পা টিপছে কেন দিপ?
সে প্রায় ২ মিনিট চুপ করে তাকিয়ে রইল তার ছেলে মেয়ের দিকে। রিয়ার মুখে মুচকি হাসি বুঝিয়ে দিচ্ছিল সদ্য মেডিক্যালে চান্স পাওয়া দাদাকে দিয়ে এইভাবে নিজের পা টেপাতে পেরে খুব মজা পাচ্ছে সে। তার চটি পরা পা দুটো দাদার কোলের উপরে রাখা। ওর দাদা দিপ পালা করে টিপে চলেছে নিজের ছোট বোন রিয়ার পা দুটো।
রিয়া হঠাত নিজের চটি পরা ডান পা দিয়ে দাদার বুকে একটা ঠ্যালা মারল। " ঠিক হচ্ছে না রে ভোম্বল। পায়ের পাতাটা আরো ভাল করে টেপ।" কথাটা শেষ করে রিয়া নিজের বাঁ পায়ের উপরে ডান পা তুলে আড়চোখে মায়ের দিকে তাকালো। অনিমার মনে হল মেয়ে বোধহয় এটা ইচ্ছা করে করল তাকে দেখানোর জন্য। কিন্তু তার জবাবে ছেলের রিয়্যাকশনটা তাকে সত্যি অবাক করে দিল। বুকে ছোট বোনের চটি পরা পায়ের খোঁচা খেয়ে ছোট বোনের চটি পরা ডান পায়ের উপরে নিজের মাথাটা নামিয়ে দিল দিপ। বোনের পায়ের উপরে নিজের মাথাটা রেখে বলল, " সরি রাজকন্যা। আমি তো বোকা ভোম্বল। সব নিজে থেকে ধরতে পারি না। আমি ভুল করলে এইভাবে ধরিয়ে দিয় তুমি।" এই বলে ঠিক যেন রিয়ার চাকরের মত ওর পা টিপতে লাগল ওর ৫ বছরের বড় দাদা দিপ।
" কি ব্যাপার রে রিয়া? হঠাত তুই বড় দাদাকে দিয়ে পা টেপাচ্ছিস কেন?" অনিমা অবশেষে জিজ্ঞাসা করল রিয়াকে।
" বা রে, আমার কি দোষ? আমি তো দাদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম এত্ত ভাল রেজাল্ট করার জন্য তুই কি গিফট চাস? তাতে দাদা বলল, গিফট তো বাবা মা দেবে, তোকে কিছু দিতে হবে না। শুধু চল ছোটবেলার মত আমরা রাজকন্যা আর বোকা চাকর ভোম্বল খেলাটা খেলি। তাই আমি ওর কথায় খেলা শুরু করলাম। প্রথমে ওকে অর্ডার করে ঘরটা পরিস্কার করালাম। তারপর অর্ডার দিলাম, আমার পা টিপে দেওয়ার জন্য। বিশ্বাস না হলে তুমি দাদাকেই জিজ্ঞাসা কর।"
এই বলে চটি পরা ডান পা দিয়ে আবার দাদার বুকে ঠ্যালা মারল রিয়া। " এই ভোম্বল, মা কে বল, আমার কথা ঠিক কিনা।"
" হ্যাঁ মা, রাজকন্যা ঠিকই বলছে। আমিই ওকে রিকোয়েস্ট করেছি ছোটবেলার মত এই গেমটা আজ খেলার জন্য।"
অনিমা ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকাল। তখন নাহয় ছোট ছিলি। কিন্তু এখন এটা কেমন খেলা তোদের? তোর বোন তোকে খেলার ছলে অর্ডার করছে, তোর কোলের উপরে পা রেখে পা টেপাচ্ছে সেটা তোর ভাল লাগছে?"
দিপকে উত্তর দেওয়ার সুযোগ দিল না রিয়া। তার আগেই চটি পরা পা দুটো দাদার কোলের উপর থেকে তুলে দাদার কাঁধের উপরে রাখল সে। " দাদার কোলের উপরে পা রাখায় দাদার খারাপ লাগার কথা মা? সরি, তাহলে দাদার কাঁধের উপরে রাখছি পা দুটো।" রিয়ার হাসি বুঝিয়ে দিচ্ছিল মায়ের সামনে দাদাকে এইভাবে ব্যবহার করতে পারার আনন্দ সে দারুন উপভোগ করছিল। বাবা- মায়ের কথায় কথায় তার সাথে দাদার স্বভাব ও পড়াশোনার তুলনা করে তাকে ছোট করার দারুন এক প্রতিশোধ নিচ্ছিল সে।"
" মা, রিয়া আমার আদরের ছোট্ট বোন। ও আমাকে একটু হুকুম করে আনন্দ পেলে এতে কি সমস্যা। ওকে খুশি দেখলে আমারও খুব ভাল লাগে।" মন দিয়ে ছোট বোন রিয়ার কাঁধে রাখা পা দুটো টিপতে টিপতে বলল দিপ।
" থাক, তোরা তোদের ইচ্ছামত খেলিস। তবে এখন খাওয়ার ঘরে এসে চা আর টিফিন খেয়ে যা আগে।" গলায় একটা হালছাড়া বিরক্তিভাব ফুটিয়ে বলল অনিমা।
ভোম্বল আর রাজকন্যা ( পার্ট ২)
অনিমার চোখের সামনেই এবার দাদার কাঁধের উপর থেকে চটি পরা ডান পা টা তুলে দাদার মুখটা চটির তলা দিয়ে আলতো করে ঠেলে রিয়া বলল, " চল দাদা, টিফিন খেতে খেতে আমার সেবা করবি।" এই বলে রিয়া দাদার কাঁধের উপর থেকে পা নামিয়ে মেঝেতে উঠে দাঁড়াল।
অনিমা স্পষ্ট দেখতে পেল দিপের ঠোঁট দুটো রিয়ার চটির তলায় ঘসা খেল। দিপ এতেও খুশি হয়ে মেঝেতে দাঁড়ানো পাঁচ বছরের ছোট বোনের চটি পরা পায়ের উপরে নিজের মাথা ঠেকিয়ে শাষ্টাঙ্গে প্রনাম করে বলল, " চলো রাজকন্যা।"
দিপের বাবা রমেশ তখন খাওয়ার ঘরের সোফায় বসে টিভি দেখছিল। রিয়া আর দিপকে একসাথে ঘরে ঢুকতে দেখে সে দিপকে কাছে ডেকে পাশে বসাল। রিয়ার দিকে ভ্রুক্ষেপও করল না।তার কোন ধারনাও নেই অবশ্য যে সন্তানকে সে আদর করে কাছে ডাকছে সেই "বোকা ভোম্বল" এতক্ষন তার অবহেলার পাত্র অপর সন্তান "রাজকন্যা"র কিভাবে সেবা করছিল! রিয়া একটু দূরে চেয়ারে গিয়ে বসল। অনিমা চা আনতে রান্নাঘরে চলে গেল।
অনিমা সবাইকে চা দিয়ে নিজেও একটা চেয়ার নিয়ে রিয়ার থেকে একটু দূরে বসে চা খেতে লাগল। রমেশ খুশি মনে দিপের সঙ্গে কিছুক্ষন কথা বলল প্রথমে। তার মন খুবই খুশি আজ। তার চিরকালের ইচ্ছা তার ছেলে বা মেয়ে ডাক্তার হোক। দিপ অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরন করতে যাচ্ছে।
কিছুক্ষন পর রমেশ নিজে থেকেই জিজ্ঞাসা করল, " তোর তো আমার কাছে একটা দারুন গিফট পাওনা আছে। বল কি চাস?"
দিপ প্রথমে কি বলবে বুঝতে না পেরে লজ্জায় মুখ নিচু করল।
" লজ্জা পাস না, বল কি চাস।" রমেশ বলল।
" আমি কোন জিনিস চাই না, তবে অবশ্যই একটা জিনিস চাই। তবে আগে তোমাকে কথা দিতে হবে যা চাই তুমি দেবে। শোনার পর না করতে পারবে না।"
" আজ কি তোর কোন কথায় না করতে পারি আমি? বল কি চাস তুই।" রমেশ বলল।
" কথা দিচ্ছ কিন্তু বাবা, পরে না বলতে পারবে না।" দিপ নিশ্চিত হয়ে নিতে চাইল বলার আগে।
" নিশ্চয়ই। তুই নির্ভয়ে বল।" রমেশ বলল।
" আমি রিয়ার চেয়ে পড়াশোনায় একটু ভাল বলে তোমরা যেরকম কথায় কথায় আমার সাথে ওর তুলনা করে ওকে ছোট কর সেটা খুব খারাপ কর। এতদিনে অকারনে আমার ছোট্ট বোনটাকে তোমরা অনেক কষ্ট দিয়েছ। এর জন্য তুমি, মা দুজনেই অনেকটা দায়ী, তার চেয়েও বেশী দায়ী আমি। আমার জন্যই ওকে ছোট থেকে এত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এবার আমাদের সবারই প্রায়শ্চিত্তের পালা, বিশেষ করে আমার। তুমি কথা দাও এতদিন তোমরা যা করেছ ঠিক তার উল্টোটা করবে। রিয়ার ভাল দিক গুলো দেখার চেষ্টা করবে আর আমার খারাপ দিকগুলো খুঁজে বার করে রিয়ার তুলনায় আমাকে ছোট করবে। রিয়া এতদিন অনেক কষ্ট পেয়েছে আমাদের জন্য। এখন থেকে ও এই বাড়ির রাজকন্যার মত থাকবে। আর আমাকে ও যা খুশি হুকুম করবে, ইচ্ছা হলে মারতেও পারে। তোমরা রিয়াকে উতসাহ না দাও, অন্তত বাধা দেবে না এতে।"
দাদার কথা শুনে রিয়ার মুখে চওড়া হাসি ফুটে উঠল। অনিমা একবার রিয়ার দিকে তাকালো, তারপর অবাক চোখে দিপের দিকে চেয়ে রইল কিছুক্ষন। সত্যি, আজ যে কি হয়েছে ছেলেটার, আর কিই বা সে চাইছে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। পরীক্ষায় দুর্দান্ত রেজাল্ট করে কেউ গিফট হিসাবে ছোট বোনের হুকুমে চলা আর তার হাতে মার খাওয়ার অধিকার চাইতে পারে তার যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না।
রমেশের অবস্থাও অনিমার মতই হল দিপের কথা শুনে। সে ভেবে রেখেছিল দিপ হয়ত দামি একটা মোবাইল, ল্যাপটপ বা এরকম কিছু গিফট হিসাবে চাইতে পারে। অথচ দিপের কথা শুনে সে যেন আকাশ থেকে পরল। প্রথমে কি বলবে তাই ভেবে পেল না। পরে তার মনে হল, হয়ত সত্যিই সে দিপের প্রতিভার প্রশংসা করতে গিয়ে রিয়াকে কিছুটা বঞ্চনা করে ফেলেছে। সেটা তার বা অনিমার অতটা চোখে না পরলেও দিপের চোখে পরেছে।
রমেশ কিছুক্ষন ভেবে ছেলেকে বলল, " ঠিক আছে, তুই যা বলছিস তাই হবে। সত্যিই হয়ত আমরা রিয়াকে কিছুটা দুঃখ- কষ্ট দিয়ে ফেলেছি না বুঝে, তোকে ওর থেকে কিছু বেশি প্রিভিলেজও দিয়ে ফেলেছি আমরা। তাই, তুই যা বললি সেরকমই হবে এখন থেকে। তবে সত্যিই কি তুই চাস তোদের সমান ভাবে ট্রিট না করে রিয়াকেই এখন থেকে প্রিভিলেজড চাইল্ড হিসাবে ট্রিট করি আমরা?"
" হ্যাঁ বাবা, আমি তাই চাই। রিয়াও তাই চায়। দেখ, এতে আমরা দুজনেই ভাল থাকব। তোমরা যা চাও, রিয়াও ভাল স্টুডেন্ট হোক, এইভাবে কিছুদিন চলার পর দেখ সেটাও হয়ে যাবে। তোমাদেরও এই ব্যাবস্থা ভাল লাগবে তখন।"
" ঠিক আছে, তাই হবে। তোর এই কথা মেনে নিলাম আমি। কিন্তু তবু আমি চাই গিফট হিসাবে তুই আমার থেকে একটা ভাল কোন জিনিস নে এর পাশাপাশি।"
" ঠিক আছে বাবা। তুমি যখন বলছ তখন সেটাও নেব।" এই বলে রিয়ার দিকে তাকাল দিপ।
" কি চাওয়া যায় বল তো রাজকন্যা?"
" একটা আই-প্যাড নিয়ে নে ভোম্বল। তবে মনে রাখবি, সেটা শুধু আমি ধরব। কখনো আমি পারমিশন দিলে তুই ধরতে পারিস। আমার পারমিশান ছাড়া ধরলে শুধু থাপ্পরই না, লাথিও খাবি মনে রাখিস।"
বাবা মার সামনে ছোট বোনের এই ভার্বাল ডমিনেশন সত্যিই অসাধারন ভাল লাগল দিপের। সে বলল, " নিশ্চয়ই রাজকন্যা। তাই হবে। আর এখন থেকে তুমি শুধু তোমার আই প্যাড ধরলে কেন, এমনিই যখন খুশি যে কারনে খুশি আমাকে থাপ্পর আর লাথি মারতে পার। এখন থেকে তুমি এই বাড়ির রাজকন্যা আর আমি তোমার বোকা ভোম্বল চাকর।"
দিপ তারপর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, " তাহলে একটা নতুন আইপ্যাডই কিনে দিও আমাকে।"
" ওই বোকা ভোম্বল, এবার এদিকে আয়। রাজকন্যার পায়ের কাছে বসে একটু পা টিপে দে।"
" নিশ্চয়ই রাজকন্যা। এখুনি যাচ্ছি", বলে দিপ গিয়ে বোনের পায়ের কাছে বসে পরল আবার। ছোট বোনের চটি পরা পা দুটো বাবা মায়ের সামনেই নিজের কোলে তুলে নিল। তারপর চাকরের মত যত্ন করে টিপে দিতে থাকল তার ছোট্ট বোন 'রাজকন্যা'র পা দুটো।
নিজের দেওয়া কথা রাখতে রমেশ বলে ফেলল," ঠিক আছে, কালই তোকে নতুন আই প্যাড কিনে দেব।"
তারপর অবাক চোখে দিপের ছোট বোনেদ সেবা করা দেখতে লাগল। সে অলৌকিকতায় বিশ্বাস করলে ভাবত রিয়া তার দাদাকে মন্ত্র তন্ত্র পরে বশ করেছে। নাহলে কিভাবে এতটা সম্ভব? দিপ নিজের গিফট হিসাবে প্রায় ছোট বোনের চাকর হতে চাইল যখন তখনও সে ভাবেনি আরেকটা গিফট দিতে চাইলে সেই দামী গিফটটাও সে ছোট বোনের হাতে তুলে দিতে চাইবে। আর রিয়া তার জবাবে দাদাকে যখন খুশি থাপ্পর আর লাথি মারার অধিকার আদায় করে দাদাকে দিয়ে বাবা মায়ের সামনে পা টেপাতে শুরু করবে প্রায় চাকরের মত। সত্যি, দুই ভাই বোনের হল কি? অবাক হয়ে ভাবতে ভাবতে দিপের চাকরের মত রিয়ার পা টিপে দেওয়ার দৃশ্য দেখতে লাগল রমেশ।
অনিমাও এক দৃষ্টিতে দেখে চলল দুই ভাই বোনের কান্ড। তার দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে যে কি চলছে অনেক ভেবেও তার কুল কিনারা করতে পারল না অনিমা।
No comments:
Post a Comment