Saturday 1 July 2017

ক্লাস মনিটর স্মৃতি...

 ক্লাস মনিটর স্মৃতি.....
রাজনগর হাই স্কুলে প্রায় ১০ বছর আমি ক্লাস ৭ এর ক্লাস টিচার আছি। কিন্তু এরকম ফার্স্ট বা সেকেন্ড হওয়া স্টুডেন্ট আমি দেখিনি। ক্লাসের ফার্স্ট বয় রাকেশ চুপচাপ, শান্তশিষ্ট, গোবেচারা, দেখতে কালো,সাধারন। আর ক্লাসের সেকেন্ড গার্ল স্মৃতি ফর্শা, অসাধারন সুন্দরী, আউটগোইং, আর ক্লাস মনিটর। আমার শিক্ষক জীবনে কোন ক্লাস মনিটরকে বাকি ক্লাসের উপর এত হুকুম চালাতে আমি আগে দেখি নি। স্মৃতি বিশেষ করে ছেলেদের উপর যথেষ্ট হুকুম চালায়, এবং বেশিরভাগ ছেলেই কোন কারনে তা মেনে নেয়। তবে সবচেয়ে বেশি ও হুকুম করে ক্লাসের ফার্স্টবয় রাকেশের উপরে। নিজে রেজাল্টে রাকেশকে হারাতে না পারার শোধ বোধহয় এইভাবে তোলে স্মৃতি। ক্রমে আমি লক্ষ্য করি রাকেশকে ক্লাসে সবার সামনে তুচ্ছ কারনে রোজ কয়েকবার থাপ্পর মারে স্মৃতি। ক্লাসের মাঝে তো বটেই, এমনকি টিফিনের সময়ও রাকেশকে টয়লেটে যাওয়ার অনুমতিও দেয়না সে। অথচ ক্লাসমেট সুন্দরী মেয়ের এই অত্যাচার বিনা তর্কে কোন অভিযোগ ছাড়াই মেনে চলে রাকেশ। ব্যাপারটা জেনে আমি প্রথমে ভেবেছিলাম। রাকেশ অন্তর্মুখী, তাই সে আমাদের কাছে অভিযোগ জানাতে ভয় পায়। অথচ ওকে ডেকে সরাসরি কথা বলে বুঝলাম ব্যাপার সেটা নয়। স্মৃতির ওর উপরে করা ভয়ানক অত্যাচার নিয়ে ওর কোন অভিযোগই নেই। বরং ও যেন বোঝাতে চাইছে, সুন্দরী স্মৃতির তুলনায় সে অতি তুচ্ছ। তাই স্মৃতি তার উপরে অত্যাচার করবে এটাই স্বাভাবিক! ব্যাপারটা শুনে ভিশন অবাক লেগেছিল প্রথমে, কিন্তু এই পৃথিবীতে ভয়ানক আশ্চর্য কত কিছুই তো ঘটে।
ক্রমে বুঝলাম এই ঘটনা স্মৃতি আর রাকেশ দুজনেই আসলে উপভোগ করে। তাই আমি ঠিক করলাম ক্লাস চলাকালীন আমিও রাকেশকে স্মৃতির তুলনায় ছোট দেখিয়ে অপমান করাব স্মৃতির কাছে। রোজ প্রথমে সোজা পড়া ধরতে লাগলাম স্মৃতিকে। স্মৃতি সঠিক উত্তর দিলে ভয়ানক কঠিন কোন প্রশ্ন করতাম রাকেশকে। রাকেশ জবাব দিতে না পারলে ওকে ফার্স্ট বেঞ্চে বসা স্মৃতির পায়ের কাছে কান ধরে নিল ডাউন হয়ে থাকতে বলতাম।
এবং রাকেশের মুখের ভাবে বুঝতে পারতাম ও এতে খুশিই হয়!
ব্যাপারটা আমাকে ভারি আশ্চর্য করে তুলেছিল। কি করে একজন স্বেচ্ছায় এইভাবে সবার সামনে ক্লাসমেট এক মেয়ের কাছে অপমানিত হতে ভালবাসতে পারে? তাও ক্লাসের ফার্স্ট বয় হয়ে? আমি ক্লাস থেকে বেরনোর সময়ে বলে যেতাম ক্লাস মনিটর স্মৃতি অনুমতি দিলে তবেই নিল ডাউন থেকে উঠতে পারবে রাকেশ। কৌতুহল বসত ওদের উপরে নজর রাখতাম ক্লাসের পরেও।
ক্রমে লক্ষ্য করলাম নিল ডাউন করালে রাকেশ কান ধরে নিজের মাথা ক্রমে নিচু করতে করতে স্মৃতির জুতো পরা পায়ের ঠিক কাছে মেঝেতে ঠেকিয়ে দিচ্ছে। আর ক্লাসের মধ্যেই খুব স্বাভাবিক ভাবেই মাঝে মাঝেই রাকেশের মাথার উপরে নিজের জুতো পরা পায়ের তলা বোলাচ্ছে স্মৃতি। আমার তরফ থেকে কোন বাধা না পেয়ে স্মৃতি কয়েকদিনের মধ্যেই নিজের জুতো পরা পা সোজা রাকেশের মাথার উপরে তুলে বসে ক্লাস করতে লাগল। ক্লাসের শুরুতেই পড়া না পারার অজুহাতে আমি রোজ রাকেশকে স্মৃতির পায়ের কাছে নিল ডাউন করে দিতে লাগলাম আর রাকেশ স্বেচ্ছায় কান ধরা অবস্থায় নিজের মাথা স্মৃতির ঠিক পায়ের কাছে মেঝেতে ঠেকিয়ে নিল ডাউন হয়ে বসে থাকতে লাগল। আর ক্লাসের সেকেন্ড গার্ল ফর্শা, সুন্দরী স্মৃতি ক্লাসের ফার্স্ট বয়, কালো, খারাপ চেহারার রাকেশের মাথার উপরে নিজের জুতো পরা পা দুটো রেখে ক্লাস করতে লাগল ক্লাসের সবার সামনেই। এটা ক্রমে রোজকার রুটিনে পরিনত হল।
আমার খারাপ লাগত না আর এটা। যেখানে ওরা দুজনেই এটা উপভোগ করছে সেখানে খারাপ লাগার প্রশ্নই নেই। কিন্তু কৌতুহল হত। রাকেশ কেন নিজের অপমান উপভোগ করে? এরকম কি আরো অনেক ছেলে আছে যারা সুন্দরী মেয়েদের কাছে নিজের অপমান রাকেশের মতই উপভোগ করে? আর ওদের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে শেষ হবে? ক্রমে এই সব প্রশ্নেরই উত্তর পেলাম।